http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Tuesday, October 11, 2011

পেছনে এক 'জুয়াড়ি' জুয়েল! Story of Gambler


যার অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) তিন পরিদর্শককে আটক করে, সেই জহিরুল ইসলাম জুয়েলের বিরুদ্ধে জুয়ায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেছেন এক ব্যবসায়ী।

মানিকগঞ্জের 'মোল্লা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ'-এর মালিক আওলাদ হোসেন মোল্লা সোমবার রাজধানীর বাড্ডা থানায় এ মামলা করেন। এতে জুয়েলসহ চার জনকে আসামি করা হয়েছে।

বাড্ডা থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, তারা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন।

জুয়েলের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ঢাকা মহানগর ডিবির পরিদর্শক শফিউদ্দিন শেখ, রুহুল আমিন এবং গিয়াস উদ্দিনকে গত ৬ অক্টোবর রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে থেকে আটক করে এনএসআই কর্মকর্তারা। ওইদিনই তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এনএসআই পরিচালক সফিক উল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জুয়েলের কাছ থেকে তথ্য পেয়েই 'ভুয়া ডিবি' ধরার জন্য সেদিন হলি ফ্যামেলির সামনে ফাঁদ পেতেছিলেন তারা। আর তাতেই ধরা পড়েন পুলিশের তিন গোয়েন্দা।

অন্যদিকে পুলিশের অভিযোগ, পরিচয় দেওয়ার পরও তিন গোয়েন্দাকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এনএসআই। ওই তিন জন বর্তমানে পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই পরিস্থিতিতে দৃশ্যত টানাপড়েন শুরু হয় সরকারের দুই সংস্থার ভেতরে।

মামলার বাদী মানিকগঞ্জের 'মোল্লা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ'-এর মালিক আওলাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সুমন নামের এক ব্যক্তি গত মাসে তার প্রতিষ্ঠানে এসে কয়েকটি 'গাড়ির বডি' বানানোর আগ্রহ দেখায়। সে এই ব্যাপারে যৌথ ব্যবসা করারও প্রস্তাব দেয়। এ জন্য ঢাকায় তার অফিসে আসতে বলে।

গত ৩ অক্টোবর মালামাল কেনার জন্য সাত লাখ টাকাসহ ঢাকায় এসে সুমনের অফিসে যান আওলাদ। সেখানে তার সঙ্গে মাসুদ নামের একজনের পরিচয় করিয়ে দেয় সুমন। ওই ব্যক্তির পরিচয় দেওয়া হয় এক মাড়োয়ারি কোম্পানির কান্ট্রি ম্যনেজার হিসেবে। কিন্তু সেখানে গাড়ির বডি বানানো নিয়ে কথার বদলে শুরু হয় জুয়া খেলা। এক পর্যায়ে সেই মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী কৌশলে তার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা রেখে দেয় এবং আরো তিন লাখ টাকা দাবি করে পরের দিন আসতে বলে।

আওলাদ বলেন, "পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সে মাড়োয়ারি নয়। তার নাম জহিরুল ইসলাম জুয়েল।"

মামলা করতে দেরির কারণ জানতে চাইলে আওলাদ বলেন, "প্রতারক সবার নাম ঠিকানা জোগাড় করে তারপর মামলা দায়ের করতে হয়েছে বলে দেরি হয়েছে।"

মামলার আগে টাকা উদ্ধারের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।

জুয়েল যে একজন জুয়াড়ি, তা বেরিয়ে এসেছে এনএসআই কর্মকর্তাদের কথাতেও।

এনএসআই পরিচালক (অভ্যন্তরীণ) মো. সফিক উল্লাহ সোমবার সাংবাদিকদের জানান, কিছুদিন আগে জুয়া খেলার জন্য জুয়েল বাড্ডা এলাকায় যান। কিন্তু 'একটি গ্র"প' সেখানে অভিযান চালিয়ে সবার কাছ থেকে টাকা কেড়ে নেয়। জুয়েলসহ অরো একজনের কাছে আশানুরূপ টাকা না পেয়ে গাড়িতে তুলে নেয় তারা।

জুয়েলকে উদ্ধৃত করে এনএসআই পরিচালক বলেন, "পরে তিন লাখ টাকার জন্য স্ত্রীকে ফোন করতে বাধ্য করা হয় জুয়েলকে। সেই সঙ্গে ব্যাংকের চেক বইও আনতে বলা হয়। তাদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী জুয়েলের স্ত্রী ব্যাংকের খালি চেকের পাতা এবং নগদ ২৬ হাজার টাকা নিয়ে কারওয়ান বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় আসেন।"

এরপর টাকা এবং চেকে তিন লাখ টাকা লিখে নিয়ে জুয়েলকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। তাকে জানানো হয়, চেকের সমপরিমাণ টাকা দিলে চেকটি ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

এরপর তারা টাকা আদায়ের জন্য জুয়েলকে বারবার ফোন করলে তিনি এ ব্যাপারে এনএসআইয়ে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগ পেয়ে 'ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের' অনুমতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রতারকদের ধরতে 'ফাঁদ' পাতা হয় বলে দাবি করেন সফিক উল্লাহ।

No comments: