http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Wednesday, January 4, 2012

ছাত্রলীগের৬৪তমপ্রতিষ্ঠাবার্ষিকীপালন/ 64TH ANNIVERSARY OF CHATTRA LEAGUE IN BANGLADESH

সংগঠনের ঐতিহ্য ও আদর্শ সংরক্ষণ এবং দেশ গড়ার কাজে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার সারাদেশে ছাত্রলীগের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে সরকারকে সবধরনের সহায়তা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার ঘোষণা দেন। জন্মদিনের কেক কাটা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, মিছিল, সমাবেশ, শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজনে রাজধানীতে দিনটি উদযাপন করেছে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। প্রতি বছরের মত এ বছরও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল আয়োজন ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এ সময় তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্রের ভিত এখনও শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দলগুলোর মাঝে কাঙ্খিত সৌহার্দ্য গড়ে উঠেনি। নির্বাচনের ফলাফল প্রতিদ্বন্দ্বীরা হাসিমুখে মেনে নিতে পারলেই গণতন্ত্রের সাফল্য আসবে। এজন্য আমাদের আরো পথ পাড়ি দিতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের চারদিকে আজ পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে। জীবনে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। বড় ধরনের পরিবর্তনের জন্য আগে নিজেকে পরিবর্তন করতে হয়। ভালো কিছু করতে হলে ভালো পরিবর্তন দরকার। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ভালো কিছু করার জন্য নিজেদের গড়ে তুলতে হবে, সংশোধিত হতে হবে। আগে মানুষ ছাত্রনেতাদের ভালোবাসতো। আর বর্তমানে ছাত্রনেতাদের দেখলে সম্মান করে না, ভয় করে। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আওয়ামী লীগের এই নেতা আরো বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ায় যোগ্য নেতা তৈরি হচ্ছে না। ২২ ধরে বছর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না। ডাকসু নির্বাচন হলে এই ২২ বছরে ৪৪ জন ভিপি ও জিএস তৈরি হতো। ছাত্র রাজনীতি আজ অসুস্থ হয়ে গেছে। এ অসুস্থতা দূর করতে ডাকসুসহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন করতে হবে। ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এমপি, আব্দুল মান্নান এমপি, আবদুর রহমান এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, বাহালুল মজনুন চুন্ু্ন, এনামুল হক শামীম, বাহাদুর বেপারী, লিয়াকত শিকদার, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, বলরাম পোদ্দার, শাহাজাদা মহিউদ্দিন, মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফসহ সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান কেন্দ ীয়, বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগরসহ বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলোসহ শাহবাগ, মত্স্যভবন, কাকরাইল, বিজয়নগর ও পল্টন হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গিয়ে শেষ হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়। বর্ণিল সাজে সাজানো হয় কার্জন হল এলাকা। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ ীয় নির্বাহী সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মিলনমেলায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে কার্জন হলের সবুজ চত্বর। পরে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাসদ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগ গতকাল সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের কর্মসূচি শুরু করে। দুপুর ১২টার দিকে ডাকসু ভবন চত্বরে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগের সভাপতি হোসাইন আহমদ তফসীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত করার দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগ। তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ-নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবং বাঙ্গালি জাতির ভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জন্ম হয় এ ছাত্র সংগঠনের। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি প্রতিটি আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ‘৬২-এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণঅভ্যূত্থান, ‘৭১-এর মহান মুক্তি সংগ্রাম, ‘৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ সংগঠনের রয়েছে সক্রিয় অংশগ্রহণ।

No comments: