প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক/প্রকাশক/মুদ্রাকর : ইশফাকুল মজিদ সম্পাদনা নির্বাহী /প্রকাশক : মামুনুল মজিদ lপ্রতিষ্ঠা:১৯৯৩(মার্চ),ডিএ:৬১২৫ lসম্পাদনা ঠিকানা : ৩৮ এনায়েতগঞ্জ আবু আর্ট প্রেস পিলখানা ১ নং গেট,লালবাগ, ঢাকা ] lপ্রেস : ইস্টার্ন কমেরসিএল সার্ভিসেস , ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি - ৮/৪-এ তোপখানা ঢাকাl##সম্পাদনা নির্বাহী সাবেক সংবাদ সংস্থা ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সী বিশেষসংবাদদাতা,দৈনিক দেশ বাংলা
http://themonthlymuktidooth.blogspot.com
Friday, November 1, 2013
Thursday, October 31, 2013
Wednesday, October 30, 2013
"BANGLADESH FEDERAL JOURNALIST UNION - BFUJ"
"ARTICLE FROM MR. ALI NEYAMAT"
BANGLADESH JATIYOTABADI VUMI HEEN DALL [Bangladesh Nationalist landless Party]
"BANGLADESH MINORITY PARTY -BMP"
"JOURNALIST SOCIETY FOR HUMAN RIGHTS"
"MUKTIZODHDHA SHONGSHOD KRIARA CHOCKRO"
"HE PRESIDENT OF THE PEOPLE'S REPIBLIC OF BANGLADESH IN UK"
Monday, October 28, 2013
মমতাজ : চরম অভাব আর দৈন্যতা থেকে সঙ্গীত জীবনের বিশালতায়
এক দরিদ্র বাউল পরিবারে জন্ম। শৈশব-কৈশোর-যৌবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে চরম অভাব আর দৈন্যতায়। বাবা মধু বয়াতির ছিল ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা। ঘরহীন, সংসারহীন বাউল বাবার হাত ধরেই শিল্পী মমতাজের গানের ভুবনে পথ চলা। গানকে সঙ্গী করেই জীবনের সমস্ত ক্ষুধা নিবারণের এক জীবন্ত উদাহরণ কিংবদন্তি মমতাজ। কোনো বাধা-প্রতিবন্ধকতাই দমিয়ে রাখতে পারেনি গানপাগল মমতাজের স্বপ্নকে। গান দিয়েই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি। হাজারো দুঃখের মাঝে গান গেয়েই আনন্দ খুঁজে পান। গানেই প্রেম-ভালোবাসা, গানেই বিরহ অনুভূত করে চলছেন। ফলে সংসার জীবনের অস্থিরতা থাকলেও তা সঙ্গীত জীবনের কোনো ছন্দপতন ঘটাতে পারেনি। বরং নিজের সুর আর ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যতায় জনমানুষের আজ অতি কাছের মমতাজ। পালাগানে শুরু হলেও বিচ্ছেদ আর মুর্শিদী গানে প্রতিষ্ঠা পাওয়া। কেবল দেশেই নয়, দেশের বাইরেও মেলে ধরেছেন তার এই অসাধারণ প্রতিভা। আবার সঙ্গীত জীবনের বিশালতায় ঠাঁই দিয়েছেন রাজনীতি আর সামাজিক কর্মকাণ্ডকেও।
ধলেশ্বরী পাড়ের সেই পালাগান শিল্পী মমতাজ আজ সংসদ সদস্যও।
সঙ্গীত জীবন, রাজনীতি, সামাজিক ভাবনা, জীবনের অর্জন-বিসর্জন নিয়ে
সাপ্তাহিক-এর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। ঢাকার শ্যামলীতে ১৯৭৬ সালে
এক বাউল পরিবারে জন্ম মমতাজের। বাবা বিখ্যাত বাউল শিল্পী মধু বয়াতী। মা
উজালা বেগম। বাবা মাকে নিয়ে তখন ঢাকায় থাকতেন। তবে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর
উপজেলার জয়মণ্ডপ ইউনিয়নের ভাকুম নামক গ্রামই আসল ঠিকানা। আমি আমার জন্ম
পরিচয় বলতে গেলে এ গ্রামের নামই বলে থাকি। কারণ শিশুকালেই বাবা-মার সঙ্গে
গ্রামে চলে যাই। ওই গ্রামের ধূলিবালিতেই আমার বেড়ে ওঠা।
মমতাজ নিজের
জবানিতেই বলেন, বাবা ভালো গান করতেন। প্রথম দিকে চাচারা উৎসাহ দিতেন।
কিন্তু এক সময় বাবার এই ছন্নছাড়া জীবন তারা অপছন্দ শুরু করলেন। মাও বাবাকে
বলতেন, সংসার তো আর চলে না। একটু সংসারে নজর দাও। আবার আমি যখন গান শুরু
করলাম তখন চাচারা আমার বাবাকে বলতেন, তুমি গান গাইতে গাইতে ফকির হইলা, এবার
মেয়েটার সর্বনাশ করবা। মেয়ে গান করলে ওকে ভালো জায়গায় বিয়েও দিতে পারবা
না। বরং পড়াশোনা করলে ভালো জায়গায় বিয়ে দিতে পারবা। আমার গান গাওয়াকে প্রথম
প্রথম চাচারা মানতে পারেনি। বাবাকে অনেক নিষেধ করতেন। সংসার এবং বাস্তবতার
কারণে বাধা দেয়ার যৌক্তিক কারণও ছিল। কারণ চাচারা তো আমাদের ভালোই চাইতেন।
তিনি
বলেন, বাবা চাচাদের বাধা মানেননি। বাবা বলতেন, আমার এতগুলো ছেলেমেয়ের
মধ্যে মমতাজ গান পছন্দ করে। ও গানও ভালো গায়। গাইতে থাকুন না, দেখি কী হয়।
আমি ছিলাম বাবার সবচেয়ে ছোট সন্তান। বাবা আমাকে সবচেয়ে বেশি আদর করত। নদীতে
গোসল করতে গেলে বাবা আমাকে কাঁধে করে নিয়ে যেতেন। আমাকে ছাড়া বাজারে যেতেন
না। কোথাও গানের অনুষ্ঠান হলে বাবা আমাকে নিয়ে যেতেন। আমিও বাবার গান অনেক
পছন্দ করতাম। আমার বাবা চাচাদের বোঝাতেন। এক সময় চাচারাও বাবাকে বাধা দেয়া
থেকে বিরত থাকলেন।
মমতাজ বলেন, ওই সময় রজবের চাঁদে খাজা বাবার উপলক্ষে
ঢাকা শহরে অনেক উরস হতো। মিরপুর এবং হাইকোর্ট মাঝারে বাউলদের দু’টি সমিতি
ছিল। এই বাউল সমিতি থেকেই বিভিন্ন জায়গায় প্রোগ্রামের ডাক আসত। আমি
ছোটবেলায় দেখিছি, ঢাকা শহরে প্রচুর বাউল গানের অনুষ্ঠান হতো। প্রতি মোড়ে
মোড়ে গান হতো। মিরপুর খাজা বাবা শাহ আলীর মাজারে মাসব্যাপী বাউল গানের
অনুষ্ঠান হতে দেখেছি। বাবা মিরপুর বাউল ক্লাবে বসতেন। সেখান থেকেই নানা
জায়গায় গান করতে যেতেন। এ কারণেই বাবা মাকে নিয়ে শ্যামলীতে থাকতেন। মূলত
মিরপুর
আমার বয়স যখন চার বছর তখনই বাবা মাকে নিয়ে গ্রামে চলে যান। শৈশব গ্রামেই কেটেছে। গ্রামেই বাবার কাছে গান শুনতাম এবং শিখতাম।
তিন
দশক আগে গ্রামের যে চিত্র তা আমাদের ভাকুমেও ছিল। বেশিরভাগ বাড়িতেই ছনের
ঘর ছিল। যাদের বাড়িতে টিনের ঘর ছিল তাদেরকেই পয়সাওয়ালা বলা হতো। অভাব ছিল
তবে মানুষের চাহিদা কম ছিল। মানুষ স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল। ছোটবেলায় মাছ আমরা
কিনে খাইনি। নদীতে মাছ ধরতাম। বাড়ির আঙ্গিনায় সব ধরনের শাকসবজিই হতো।
হাঁস-মুরগি, গরুর দুধও কিনতে হতো না। এখন তো আপনি গ্রাম আর শহরের মধ্যে
তেমন পার্থক্য করতে পারবেন না। গ্রামের মানুষের চাহিদা আর শহরের মানুষের
চাহিদার মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, শিক্ষার কারণে
আধুনিকতার ছোঁয়া সব জায়গাতেই লেগেছে। ধলেশ্বরী নদী হচ্ছে আমাদের বাড়ির
একেবারে কাছে। শৈশবের বেশিরভাগ সময়ই আমার নদীতে কেটেছে। নদীতে সাঁতার কাটাই
ছিল আমার প্রধান কাজ। নদী দিয়ে বড় বড় পাল তোলা নৌকা যেত। আমরা ছেলেমেয়েরা
পিছনের বৈঠা বেয়ে নৌকায় উঠতাম। সঙ্গে যারা থাকত তারা মাঝিদের বলত, মমতাজ
গান গাইতে পারে। মাঝিরা আমার গান শুনত। গান শুনে আমাদের কখনও কখনও দুপুরে
খাওয়াইত। বাড়ি থেকে আনা ফলমূল দিত। মাঝিরা অনেক আদর করত। এভাবে গান গাইতে
গাইতে দুই-তিন মাইল উজানে চলে যেতাম। আবার নৌকা থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে নেমে
সাঁতার কেটে আমাদের ঘাটে চলে আসতাম। সে মজা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
আমি
বাড়ির কাজ করতাম না। বাড়ির সবার ছোট ছিলাম বলেই হয়ত বেশি ডানপিটে ছিলাম।
মা-ভাবিরা অনেক বকত। ভাবিরা বলত, ‘ও মাইয়্যা মানুষ। ছেলেদের মতো চলাফেরা।
সারাক্ষণ দস্যির মতো ঘুরে বেড়ায়। ছেলেদের মতো নদীতে সাঁতার কাটে।’ অনেক সময়
মার কাছে নালিশ করতেন তারা। দাঁড়িয়াবান্দা, গোল্লাছুট, বউছি খেলা নিয়েই
দিন কাটত। ছেলেমেয়ের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ ছিল না। সবাই মিলেমিশে খেলাধুলা
করতাম। গরমের দিনে জ্যোৎস্না রাতে গ্রামের মাঠে গোল্লাছুট খেলার মজাই
আলাদা। মধ্য রাত পর্যন্ত মাঠেই থাকতাম।স্কুল যাওয়া আর খেলাধুলা নিয়েই
সময় পার করেছি। গ্রামে যাত্রা গান হতো। গ্রামের মানুষই অভিনয় করত। আমরা রাত
জেগে দেখতাম। পরের দিন আবার আমরা ওই অভিনয়গুলো নকল করে দেখাতাম। মেয়েদের
মধ্য থেকেই কেউ নায়ক আবার ছেলেদের মধ্য থেকে কেউ নায়িকা হতাম। ওইভাবেই
সাজতাম। ডায়ালগ দিতাম। এমন কোনো খেলাধুলা বা কাজ নেই যা আমি করিনি। ছেলেরা
যা করত আমিও তাই করতাম। শুধু করতাম না ঘরের কাজ। ঘরের কাজ করা আমি কখনও
পছন্দ করিনি। এখনও করি না। মমতাজ বলেন, আগে তো গ্রামের ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে
স্কুলে যেত। আমার বেলাতেও তাই হয়েছে। আমি ৭ বছর বয়সে স্কুলে যাওয়া শুরু
করি। সহপাঠীরাও আমার সমবয়সীই ছিল। গ্রামের জয়মণ্ডপ সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে পড়ালেখার যাত্রা শুরু। স্কুলে যাওয়ার জন্য বাবা-মার তরফ থেকে যে
তাগিদ ছিল বিষয়টি তা নয়। বলা যায়, অন্যের দেখাদেখি অনেকটা নিজ উদ্যোগেই
স্কুলে যাওয়া শুরু করি। আগে ‘বি’ ক্লাসে পড়তে হতো। এরপর ক্লাস ওয়ানে। আমার
পাশের বাড়ির এক হিন্দু ছেলে ‘বি’ ক্লাস থেকে ওয়ানে উঠল। আমি তখন তার ‘বি’
ক্লাসের বইগুলো কিনতে চাইলাম। বইয়ের দাম হলো ৭ টাকা। আমি তখন তাকে বললাম,
ঠিক আছে বইগুলো আমাকে দাও, আমি স্কুলে যেতে থাকি। টাকা পরে দেব। বই নিয়ে
আমি মাকে বললাম, নিকুঞ্জের কাছ থেকে বই কিনেছি। ওকে ৭ টাকা দিতে হবে। পরে
মা মুরগি বিক্রি করে সেই বইয়ের দাম দেয়। এভাবেই প্রথম স্কুলে যাওয়া। স্কুলে
যাওয়ার পরেই তো স্যারদের আমার প্রতি চোখ পড়ে গেল। স্যাররা বললেন, মধু
বয়াতির মেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছে। ও অবশ্যই গান গাইতে পারবে। স্কুলে
অনুষ্ঠান হলেই আমার ডাক পড়ত। আমারও লজ্জা-শরম একটু কম ছিল। কেউ শুনতে
চাইলেই ঝটপট শুনিয়ে দিতাম। হাটে, ঘাটে, রাস্তায় কেউ গান শুনতে চাইলেই বলে
ফেলতাম। কোনো বাছ-বিচার করতাম না। আগেই বলেছি, গোসল করতে গিয়ে নৌকায় উঠে
মাঝিদের গান শোনাতাম। একদিন তো মাঝিরা গান শুনে খুশি হয়ে আমাদের কয়েক
বান্ধবীকে কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ালেন। শুধু তাই নয়, মাঝিদের একজন আমাকে ৫ টাকা
বকশিশও দিলেন। গান গাওয়ার প্রথম বকশিশ। মমতাজ বলেন, আমি তখন একটু একটু পালা গান শিখতেছি। একদিন শুনতে পেলাম যে, আমাদের মানিকগঞ্জের পুটাইল নামের এক জায়গায় পালাগানের আসর বসবে। গাইবেন বিখ্যাত বাউল শিল্পী রশিদ সরকার এবং আলেয়া বেগম। রশিদ সরকার তখন সারাদেশের হাতেগোনা চার-পাঁচ জন পালাগান শিল্পীর মধ্যে একজন। সারা দেশেই এক নামে পরিচিত। আমি বাবাকে বললাম যে, চলো গান শুনতে যাব। দিনের বেলায় গান। গিয়ে রশিদ সরকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। তার বাড়ি সিঙ্গাইর সদরে। বাবার সঙ্গে অনেক গান করছেন তিনি। আমাকে দেখে বাবাকে বললেন, ওকে নিয়ে এসেছেন ভালোই হয়েছে। গান শুনতে পারবে। আমরা গান শোনার জন্য অপেক্ষা করছি। মানুষে মানুষে মাঠ কানায় কানায় ভরে গেছে। বেলা বাড়ছে কিন্তু আলেয়া বেগম আসছে না। দর্শক তো গান শোনার জন্য চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দিল। এক পর্যায়ে রশিদ সরকার মঞ্চে উঠে দর্শকরদের উদ্দেশে দু’টি গান করে বললেন, আমাদের পালাগানের আরেক শিল্পী আলেয়া বেগম এখনও আসতে পারেনি। আপনারাই বলুন, কী করা যায়। তখন তো মোবাইলও ছিল না যে ফোন করে খোঁজ নিতে পারবে। শিল্পী আসেনি এই কথা শুনে তো দর্শক আরও অস্থির। তখন রশিদ সরকার বাবাকে বললেন, আপনি মমতাজকে পালা শেখাচ্ছেন। ও কি গাইতে পারবে। বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করল। আমি বললাম, ওনাকে গুরু-শিষ্য নিতে বলো। শিষ্যের পালা হলে আমি গাইতে পারব। তখন রশিদ সরকার মঞ্চে উঠে দর্শকদের বললেন, আলেয়া যেহেতু আসেনি আর আসবে কিনা তা বলাও যাচ্ছে না, তাই বিকল্প ভাবতে হচ্ছে। আপনারা চাইলে ছোট্ট একটি মেয়েকে নিয়ে আমি গাইতে চাই। ও মধু বয়াতির মেয়ে মমতাজ। গান শিখছে। আমরা গুরু-শিষ্যের পালা করব। দর্শকরা আপাতত শান্ত হলো। রশিদ সরকার অনেক জানতেন। কিন্তু আমি তো ভালো গান করতাম। মঞ্চে উঠে শুরু করলাম। আমার ওস্তাদ মাতাল রাজ্জাক দেওয়ানের লেখা গান। গানে অনেক প্রশ্ন। তো একপর্যায়ে রশিদ সরকার বলে ফেললেন, তোমার এক গানের প্রশ্নের উত্তর দিতে দফারফা। তিনি খেপে গেলেন। পাবলিক তো মহাখুশি। রশিদ সরকারের মতো বাউলকে খেপিয়ে দেয়া চাট্টিখানি কথা নয়। আমি তখন বললাম, পারলে উত্তর দেন। না পারলে বলেন যে, জানি না। তখন সে আরও উত্তেজিত। বললেন হ্যাঁ, রশিদ সরকার পারবে না এমন কোনো বিষয় আছে? এরকম টান টান উত্তেজনা নিয়েই গান শেষ করলাম। দর্শক বলতে শুরু করল, রশিদ সরকারে মতো শিল্পীর সঙ্গে মধু বয়াতির মেয়ে গান করল। এতো বিশাল ব্যাপার। পরে রশিদ সরকার বাবাকে বললেন, ও তো ভালো গায়। শ্রম দিন। পারলে আমিও সহযোগিতা করব। এভাবেই রশিদ সরকারের সঙ্গে পালাগানে জুটি বাঁধা। অল্প বয়সেই তার সঙ্গে বিয়ে হয়। বলতে পারেন বাল্যবিয়ে। রশিদ সরকারকে যখন বিয়ে করি, তখন আমার বয়স ১৫ কি ১৬ বছর হবে। রশিদ সরকারের সংসার জীবনের চেয়ে তার সঙ্গে গানের জীবনই আমার মধুর ছিল। আসলে সংসার জীবনে রশিদ সরকারকে তেমন একটা সময় দেয়া হয়নি। আমি তার সঙ্গে গান করতাম। ১৫/১৬ বছর বয়সে তার সঙ্গে নানা জায়গায় গান করতে যেতাম। লোকে মন্দ বলত বলেই দু’জনের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া। আমার ইচ্ছা ছিল বড় শিল্পী হওয়ার। আর এ কারণেই হয়ত তাকে বিয়ে করা। আমার বয়স ছিল ১৬ আর তার বয়স ছিল ৪৫। ফলে স্বামী, সংসার কী তা আমার কাছে তেমন গুরুত্ব পেত না। এর চেয়ে তাকে ওস্তাদ হিসেবেই বেশি গুরুত্ব দিতাম। এরকম বিষয় কেউই ভালোভাবে নিতে চায় না। রশিদ সরকারের আগের স্ত্রীর বেলাতেও তাই হয়েছে। রশিদ সরকার ছিলেন পীর মানুষ। বড় সংসার ছিল। সারা দেশে হাজার হাজার মুরিদ ছিল তার। তিনি অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। সেই তুলনায় আমি ছিলাম খুবই নগণ্য। সঙ্গত কারণে তার পরিবার বিষয়টি মানতে পারেনি। আমি আমার বাবার বাড়িতেই থাকতাম। রশিদ সরকারের বাড়ি যাওয়া হয়নি। তবে বিয়ের পর রশিদ সরকারের সঙ্গেই গান করতাম।
রাজনীতিতে আসার বিষয়ে মমতাজ বলেন, আমার বাবা বাদে বংশের অনেকেই ভালো অবস্থায় ছিলেন। আমার এক দাদা দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এবং আত্মীয়স্বজন আগে থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করতেন। আর রশিদ সরকারও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ’৯৬-এর নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগের নির্বাচনের পক্ষে প্রচুর গান করি। এভাবেই এই দলটির প্রতি বিশেষ আকর্ষণ তৈরি হয়। পরে ’৯৫-’৯৬-এর দিকে সিঙ্গাইর থানা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নির্বাচিত হই। আর এবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আমাকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ নির্বাচিত করা হয়। আমি সংস্কৃত বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
Zamtola, West Khilkhet
Sunday, October 27, 2013
"FIGHT FOR EQUAL RIGHTS - CHT'S"
"JUBO JATUYI GONOTONTRY PARTY"
"LIBERAL DEMOCRATIC PARTY - LDP"
"BONGOBONDHU SHANGSKRITIK ZOT"
"BANGLADESH AWAMI MUKTIZODHDHA PRONZONMO LEAGUE"
Subscribe to:
Posts (Atom)