http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Monday, November 28, 2011

PRESS RELEASE FROM IAPSCC

সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ঢাকা সম্মেলনের প্রথম দিনের উদ্বোধনী শেষে, বর্নাঢ্য র‌্যালি ঢাকার রাজপথ প্রদক্ষিন কেরে। অতপর: ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে দিনব্যাপি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দেশে দেশে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জঙ্গী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা বাংলাদেশের মাটিতে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তোলার দুর্বার প্রত্যয় ঘোষণা করে শুরু হল তৃতীয় আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ঢাকা সম্মেলন। ২৫টি দেশের সংগ্রামী নেতৃত্বের উপস্থিতিতে দশ হাজারেরও বেশি মানুষের মিলিত কণ্ঠে বলিষ্ঠভাবে উচ্চারিত হল দেশে দেশে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, লুণ্ঠন, দখল, অবরোধ ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম বেগবান করার অঙ্গীকার, পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের চির অবসানের বার্তা। ইন্টারন্যাশনাল এন্টি-ইম্পিরিয়ালিস্ট এন্ড পিপলস সলিডারিটি কোঅর্ডিনেটিং কমিটি (IAPSCC) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর যৌথ উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে শুরু হয়েছে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। বেলা ১২টায় ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চের খোলা ময়দানে সুবিশাল স্টেজে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং আইএপিএসসিসি’র সেক্রিটারিয়েট মেম্বার কমরেড খালেকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে শুরু হয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন। এ সময় বিপুল করতালি ও মুহুর্মুহু শ্লোগানের মধ্যে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন আইএপিএসসিসি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মানিক মুখার্জী, নেপালের ইউনিফায়েড কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)’র কেন্দ্রীয় কমিটির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ বাহাদুর মাহারা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্কার্স ওয়াল্ড পার্টির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও আইএপিএসসিসি’র সেক্রেটারিয়েট সদস্য কমরেড সারা ফ্লাউন্ডার্স-সহ উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, সিরিয়া, মিশর, তুরষ্ক, জর্ডান, ইরান, লেবানন, ফ্রান্স, কানাডা, মরক্কো, মৌরিতাস, কাতার সহ ২৫টি দেশ থেকে আসা নেতৃবৃন্দ। সভাপতির ভাষণে কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানি এবং সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু লুটেরা শাসকগোষ্ঠীর কবল থেকে তেল-গ্যাস-কয়লাসহ প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ রক্ষার দাবিতে আমরা লড়াই করছি। আর আমেরিকার মাটিতে মানুষ লড়ছে বিশ্ব পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ওয়ালস্ট্রিট দখল করার ডাক দিয়ে। এ উভয় আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই - শোষণ থেকে মুক্তি, সাম্রাজ্যবাদের যুদ্ধ-লুটতরাজ-দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি।” তিনি বাংলাদেশে পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বৃহত্তর জঙ্গী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল বাম-প্রগতিশীল-দেশপ্রেমিক সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। আইএপিএসসিসি’র সদস্যসচিব কমরেড মানিক মুখার্জী তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, তিউনেশিয়া থেকে মিশর, আমেরিকার ওয়ালস্ট্রিট দখল - সর্বত্র আজ পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতেই এ সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে দেশে চলমান পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশের মাটিতেও যদি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তোলা যায় তবেই এ সম্মেলন সার্থক হবে। আইএপিএসসিসি’র সভাপতি রামজে ক্লার্ক শারীরিক অসুস্থতার জন্য উপস্থিত থাকতে না পেরে আন্তরিক দুঃখপ্রকাশ করে তাঁর লিখিত বার্তায় বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এবারের সম্মেলন আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় - সমস্ত দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। বার্তায় তিনি বলেন, “নিকট ভবিষ্যতে সাম্রাজ্যবাদী সংঘাতের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ। এখানে অবস্থান নিয়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে। সেইসাথে চীনকে আয়ত্ত্বে এনে তার অধিভুক্ত অঞ্চল হিসেবে এর উপর কর্তৃত্ব করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আপনারা নিশ্চিতভাবে ধরে নিতে পারেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সমস্ত কূটকৌশল ও সর্বশক্তি নিয়েই এই ভূ-খণ্ডে উপস্থিত হবে। তাই আমি আশা করি এই ভবিষ্যত পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনারা সবাই গভীর মনোযোগ দেবেন।” তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান কমরেড সারা ফ্লাউন্ডার্স। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সারা ফ্লাউন্ডার্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মানবতা, শান্তি এবং সভ্যতার শত্রু হিসাবে আখ্যা দিয়ে বলেন, দেশের অভ্যন্তরেই আমরা মার্কিন শাসকদের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি। এরপর কমরেড পুষ্প কমল দহল প্রচন্ড’র পাঠানো বার্তা পাঠ করেন কৃষ্ণ বাহাদুর মাহারা। কমরেড প্রচন্ড তাঁর বার্তায় বলেন, ইচ্ছা এবং পরিকল্পনা থাকার পরও এ আয়োজন আমরা করতে পারিনি। ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রবল আগ্রহ ছিল সম্মেলনে উপস্থিত থাকার। কিন্তু নেপালের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা-ও সম্ভব হয়ে উঠল না। তিনি বলেন, ইউনিফায়েড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওবাদী) সমস্ত রকম শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলের সাথে এক কাতারে থাকতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্চের পাশে নির্মিত শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, যুদ্ধবিরোধী গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর নেতৃবৃন্দ আইএপিএসসিসি ও অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশের পক্ষ থেকে বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সম্মেলনে ২৫টি দেশ থেকে প্রায় দেড় শতাধিক ডেলিগেট অংশ গ্রহণ করছেন। আগামী দুই দিন নাট্যমঞ্চের কাজী বশীর মিলনায়তন ও শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে বিষয়ভিত্তিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ নভেম্বর বিকেলে কাজী বশির মিলনায়তনে ‘ঢাকা ঘোষণা’ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আইএপিএসসিসি’র সদস্য কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মঞ্জুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন, সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ আহমেদ, বিমল বিশ্বাস, অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক আবিদুর রেজা, অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন খান আরেফিন, জোনায়েদ সাকী, সাইফুল হক, শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, মাহমুদুর রহমান বাবু, হামিদুল হক, মোজাম্মেল হক তারা, রাগীব আহসান মুন্না, শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী, বাদল খান, মেজবাহউদ্দীন আহমেদ, আব্দুল কাদের, বাবুল বিশ্বাস, এড. জাহেদুল হক মিলু, রাজেকুজ্জামান রতন, নজরুল ইসলাম, এড. আব্দুস সালাম, ডা. ফায়জুল হাকিম লালা, সামসুজ্জামান সেলিম, রেজাউর রশীদ খান, আবু হামেদ সাহাবুদ্দীন, ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থানের নেতা আমিনুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

No comments: