http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Monday, November 21, 2011

এমপি সানজিদার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের যত অভিযোগ


শ্যামপুর-কদমতলী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেছেন এমপি অ্যাডভোকেট সানজিদা খানমের বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, সানজিদা খানম এমপি নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার আগে ঢাকা-৪ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের ন্যাম ভবনের বাসভবনে আসার জন্য খবর দেন। তারপর গাড়িবহর নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করেন। যে কোনো সময় এলাকায় যাওয়ার আগে তার পিএস থানায় খবর দেন প্রটোকলের জন্য। থানার আগের ওসিদের মতো বর্তমান ওসিরাও নিজে সঙ্গে থেকে অথবা অন্য কর্মকর্তাসহ গাড়ি নিয়ে প্রটোকল দেন। ফলে এলাকার লোকজন এমপির সিন্ডিকেট সদস্যদের অপকর্ম সম্পর্কে মুখ খুলতে সাহস পান না। অপরাধীরাও বিপুল উৎসাহ নিয়ে নির্ভয়ে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। কোনো অপরাধী গ্রেফতার হলে এমপি নিজে কোর্টে মুভ করে জামিন করিয়ে নিয়ে আসেন। সম্প্রতি এমনই একজন অপরাধী র‌্যাব-১-এর হাতে ১২টি চোরাই সিএনজিসহ গ্রেফতার হয়। র‌্যাব গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী গ্রেফতার ব্যক্তি ঢাকা শহরে সিএনজি অটোরিকশা চোরের সরদার। আশ্চর্য হলেও সত্য, এমপি নিজে ওই সিএনজি চোরকে মুক্ত করান। অভিযোগে আরও বলা হয়, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত দুই কক্ষবিশিষ্ট ছাপড়া ঘরে বসবাস করলেও এখন বিলাসবহুল অট্টালিকা তৈরি করেছেন, যদিও তিনি এখন ঢাকা-৪ এলাকায় বসবাস করেন না। যখনই নির্বাচনী এলাকায় থাকেন তখন তার সিন্ডিকেট তাকে ঘিরে রাখে। তার সিন্ডিকেটের সদস্য মুদি আকাশ (নির্বাচনের আগে মুদি দোকানদার ছিল), তাইজু (পূর্বপুরুষ আওয়ামী লীগবিরোধী মুসলিম লীগ পরিবার, বর্তমানে জাতীয় পার্টি), টেম্পো বাবুল (কয়েক দিন আগে টেম্পো ছিনতাইকারী হিসেবে র‌্যাব-১-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিল), চাঁদাবাজ টিটো (বিএনপি জোট সরকার আমলে যুবদল নেতা, নব্য আওয়ামী লীগার), ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাবু, মাদক ব্যবসায়ী রাসেল, মানিক ও কাওছার গং আন্ডারওয়ার্ল্ভ্রের সদস্য সেবক। আওয়ামী লীগের পুরনো নেতা-কর্মীরা ধারেকাছেও যেতে পারেন না। ফলে নব্য আওয়ামী লীগার অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় যেসব সুবিধাবাদী এমপি সালাহউদ্দিনের চারদিকে ছিল, তারাই এখন এমপি সানজিদার চারদিকে বেষ্টনী সৃষ্টি করে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে, লুটপাট করছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার শ্যামপুর ইউনিয়নের গরিব-দুঃখী মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য দুই হাজার ৫০০ ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেয়। প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ১০ কেজি চাল বিনামূল্যে দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক গত ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় সার্কেল অফিস থেকে জানানো হয়, কার্ডের মধ্যে ৩০০ চেয়ারম্যান কর্তৃক এবং বাকি দুই হাজার ২০০টি এমপি কর্তৃক বিতরণ করা হবে। কিন্তু বরাদ্দকৃত চাল শুধু শ্যামপুর ইউনিয়নবাসীর জন্য এবং প্রতিটি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানকে দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে। ফলে সঙ্গত কারণেই চেয়ারম্যান সিও অফিসের প্রস্তাবে সম্মত হননি। পরে সিও অফিস থেকে নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয় সমান-সমান ভাগাভাগির। বিষয়টি চেয়ারম্যান টেলিফোনে ঢাকা জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন এবং সিও অফিসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে এমপির নির্দেশে সিও অফিস চাল বিতরণ বন্ধ করে দেয়। চাল নিতে আসা ভুখানাঙা মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। চালের দাবিতে এমপির বিরুদ্ধে মিছিল এবং তার পদত্যাগ দাবি করে। বিএনপি পরিবার থেকে আসা, একসময়ের আওয়ামী লীগবিরোধী ও সাবেক ছাত্রদল নেত্রী সানজিদা খানম নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা নিয়ে, তার ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শামীমের পরামর্শে ঢাকা-৪ এলাকায় ছাত্রদল ও যুবদল নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা করছেন না। ফলে এলাকাবাসী আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দিনে নৌকায় ভোট চাওয়া কষ্টকর হবে। স্থানীয় কোনো নেতা এ ব্যাপারে তাকে পরামর্শ দিলে তিনি উত্তরে বলেন, 'টাকা থাকলে নির্বাচনের সময় মানুষ পাওয়া কোনো সমস্যাই নয়। নির্বাচনের প্রাক্কালে পার্টির ফান্ডে টাকা ঢেলে দিলে মনোনয়ন পাওয়া যাবে।'

No comments: