অনলাইন সাংবাদিকতা সবচেয়ে স্মার্ট পেশা: জাহিদ ইকবাল
ঢাকা- বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিওজেএ) সভাপতি জাহিদ ইকবাল বলেছেন, সাংবাদিকতা বিশ্বজুড়েই একটি মহান ও স্বাধীনপেশাহিসেবেস্বীকৃত।অনলাইনসাংবাদিকতাসাংবাদিকতার সবচেয়ে গতিশীল ও আধুনিক সংস্করণ। সবচেয়ে স্মার্ট, তরুণ, ক্রিয়েটিভ, পরিশ্রমী, ব্যক্তিত্ববানরা অনলাইন মিডিয়াকে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হয়। কারন আগামীরবিশ্বমিডিয়াতে অনলাইনই সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। বাংলাদেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব বাংলাদেশী অনলাইন মিডিয়াতে কাজ করছেন তাদের নিয়ে আমরা বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিওজেএ) গঠন করে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অনলাইন সাংবাদিকতাকে সবচেয়ে স্মার্ট পেশা হিসেবে পরিচিত করাতে চাই।সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক জাহিদ ইকবাল এদেশের অনলাইনসংবাদ মাধ্যমের ভবিষ্যৎ এবং তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিস্টঅ্যাসোসিয়েশন সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেন।ঢাকা মহানগরী খিলক্ষেতের স্থায়ী বাসিন্দা জাহিদ ইকবাল। জন্ম ১৯৭৬ সালে ঢাকার খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকায়। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য ও সমাজসেবায় নিয়োজিত ছিলেন।বিশ্বের বহুদেশে ভ্রমণ করে দেশের ফিরেন এদেশের তরুণ সমাজের কল্যাণে কিছু করারপ্রত্যয় নিয়ে। এলক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন।গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ ঢাকায় বাংলাদেশে অনলাইন সাংবাদিকদের কল্যানে গঠন করেন- বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন(বিওজেএ)। নিউজ এজেন্সি টোয়েন্টিফোর ডটকম নামে একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি ।দেশের বাইরে দীর্ঘ সময় বিভিন্ন জনপ্রিয় পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন ইকবাল। এখন সাংবাদিকদের কল্যান ও অনলাইন সাংবাদিকতার প্রসারে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।ঢাকা শহরের একজন আলোকিত মানুষ জাহিদ ইকবাল একাধারে একজন লেখক, সাংবাদিক, সংগঠক ও রাজনীতিক।জাহিদ ইকবাল একটি স্কুল, পাঠাগার, সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্টা করেছেন।নিন্মে সাক্ষাতকারের চুম্বক অংশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু তুলে ধরা হলো :-প্রশ্ন: বিওজেএ’র উদ্দেশ্যে কি?জাহিদ ইকবাল: সারাবিশ্ব ও বাংলাদেশেও অনলাইন সাংবাদিকতা সবচেয়ে জনপ্রিয়। এখনজনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছে অনলাইন মিডিয়াগুলো। কিন্তুবাংলাদেশে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ ন্যায্য অধিকারথেকে বঞ্চিত। তাদের সংঘবদ্ধ করে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসাই বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন বা বিওজেএ’র উদ্দেশ্য।প্রশ্ন: অনলাইন সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?জাহিদ ইকবাল: অনলাইন সংবাদ মাধ্যম একটি আধুনিক ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার মাধ্যমেযেকোনো সংবাদ দ্রুত সারা বিশ্বের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নেরযুগে অবশ্যই এর ভবিষ্যৎ আশাব্যঞ্জক বলেই আমি মনে করছি। বিশ্বব্যাপী অনলাইনেরসংবাদ, বিজ্ঞাপন, আন্দোলন, প্রচারণা, ই- কমার্স জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও অনলাইনেরজনপ্রিয়তা বেড়েছে তুমুলভাবে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে আনলাইনের প্রভাব বৃদ্ধিপেয়েছে অনেক বেশি। ব্যবসা- বাণিজ্যেও অনলাইনের প্রভাব বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।ফলে নিজেদের টিকিয়ে রাখতেই অনলাইন নির্ভর হচ্ছে মানুষ। অনলাইন সবুজবান্ধব প্রযুক্তিহিসেবেও সমাদৃত হচ্ছে।প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসা সম্প্রসারণে যেমন নিজেদেরওয়েবসাইটে নানা সেবা দিচ্ছ্নে তেমনি অনলাইন নিউজপোর্টালসহ বিভিন্ন ওয়েব সাইটেওনিজেদের বিজ্ঞাপণ দিচ্ছে। কারণ এখন ব্যবসার প্রতিযোগিতা বিশ্ববাজারের সঙ্গে।অনলাইনের মাধ্যমে তাই এগিয়ে থাকতে তৎপর হচ্ছেন ব্যবসায়ী ও কর্পোরেট দুনিয়া।বিশ্বের শীর্ষ পত্রিকা ও সংবাদমাধ্যমগুলো অনলাইনে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতেচেষ্টা করছে। বিশ্বব্যাপী ছাপানো পণ্যের দাম অপ্রত্যাশিত হারে বেড়ে যাওয়ায় খরচেরসঙ্গে তাল মিলিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে ছাপানো সংবাদমাধ্যমের। তাই অনলাইনবিকল্প সমাধান।বিশ্বব্যাপী ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা ও প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে অনলাইনে অভ্যস্ত হচ্ছেনপ্রায় সব ব্যবসায়ী। দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন কয়েক ঘরে উন্নীতহয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা।দেশে প্রতিটি ইউনিয়নে ইন্টারনেট সার্ভিস ও তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে প্রতিমাসে ৪০ লাখ গ্রামীণ মানুষ ই-সেবা নিচ্ছেন ।গত চার বছরেইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। তাই দেশেঅনলাইনের পাঠকশ্রেনীও বিশাল।প্রশ্ন: অনলাইন সংবাদ মাধ্যম জনপ্রিয় করে তুলতে বিওজেএ কি কি উদ্যোগ গ্রহনকরেছে ?জাহিদ ইকবাল: উন্নত বিশ্বের কোটি কোটি পাঠকদের বেঁচে থাকতে অক্সিজেনের ভূমিকায়অবতীর্ণ হয়েছে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। সারাবিশ্বের সংবাদ পাঠকদের কাছে দ্রুত পৌঁছেদেয়ার ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থার বিকল্প নেই। তারপরও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেবাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। তাই পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীকে আধুনিক সংবাদ মাধ্যম বাঅনলাইন সংবাদপত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বিওজেএ সারাদেশে বিভিন্ন স্থানেক্যাম্পিং শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে, প্রথমিক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যানারপোস্টারের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। শিগগিরই আরো ব্যাপক পরিসরে প্রচার-প্রচারণারমাধ্যমে অনলাইনকে মানুষের দারস্তে পৌঁছে দিতে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিওজেএ।প্রশ্ন: সাংবাদিক হত্যা, গ্রেপ্তার নির্যাতন প্রসঙ্গে আপনার বক্তব্য কি?জাহিদ ইকবাল: দেখুন বর্তমানে আমাদের দেশের সাংবাদিকরা দু’ভাগে বিভক্ত। এরমধ্যেসাধারন সাংবাদিকদের একটি বড় অংশই সবসময় অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেনতাদের পক্ষে কথা বলার জন্য কেউ নেই। যেমন সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার ব্যাপারেসাংবাদিকরা কিছু দিন স্বোচ্চার থাকলেও ধীরে ধীরে তারা তা ভুলে যাচ্ছেন।এছাড়ামাহমুদুর রহমানের বিষয়টিই দেখুন। তার মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের একটি পক্ষসোচ্ছার হলেও অপরটি মুখে কুঁলুপ এঁটে আছেন। কিন্তু তিনি যে একটি পত্রিকার সম্পাদকতারা একথা ভুলেই গেছেন। আমি অবিলম্বে সকল সাংবাদিকের মুক্তি এবং বন্ধ প্রিন্ট ওইলেক্টনিক্স মিডিয়া খুলে দেয়া দাবি জানাচ্ছি। বড় বাস্তব কথা হলো ইস্যুর নিচে চাপাপড়ছে ইস্যু।প্রশ্ন: অনলাইন মিডিয়াকে ক্যারিয়ার কেমন ও বেকারত্ব নিরসনে অনলাইনজার্নালিজমের গুরুত্ব কতখানি?জাহিদ ইকবাল: বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বেকার তরুণ-তরুনী।অনলাইন জার্নালিজম একটি প্রেস্টিজিয়াস জব হিসেবে তারা এ পেশাকে গ্রহণ করলেদেশের বেকারত্ব অনেকাংশেই দূর হবে বলে আমি মনে আধুনিক যুগের পেশা অনলাইন সাংবাদিকতা।প্রশ্ন:গণমাধ্যমের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপকে আপনি কিভাবে দেখছেন?জাহিদ ইকবাল: গণমাধ্যমের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ স্বাধীনতার শুরু থেকেই ছিলো যাবর্তমান সরকারও অব্যাহত রেখেছেন। এতে প্রমাণ করে কুকুরের লেজ ঘি দিয়ে কখনো সোজাহয় না। ৭৪ সালেও তৎকালীন আ’লীগ দেশের মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে বাকিগুলো বন্ধকরে দিয়েছিলেন। যা তাদের অতীত ইতিহাসকেই আরো একবার মনে করিয়ে দেয়। প্রশ্ন: একেবারে বাজেট ছাড়া বা নাম সর্বস্ব অনলাইন বন্ধে বিওজেএ কোনোপদক্ষেপ নিবে কি না ?জাহিদ ইকবাল: আমরা কোনো মিডিয়া বা অনলাইন পত্রিকা বন্ধের পক্ষপাতী নই। শক ফুলবিকশিত হবার সুযোগ দিতে হবে। তবে পেশাদার হাউজগুলো টিকে থাকবে নিজের যোগ্যতায়।যদি সরকার অনলাইনকে একটি নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসেন তাহলে এগুলো এমনিতেই বন্ধহয়ে যাবে। সেই সাথে আমারদেশ পত্রিকা, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি চালু করার জন্যসরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।প্রশ্ন: অনলাইন সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিওজেএ কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকরেছে কি না?জাহিদ ইকবাল: অনলাইন সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে বিওজেএ-এর পক্ষ থেকেদীর্ঘ মেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি, আগামীকয়েক মাসের মধ্যেই কোর্স চালু করা সম্ভব হবে। আমরা সবদিকে এগিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর।সংবাদ প্রেরকআরাফাত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক(মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত)/বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন(বিওজেএ)/মোবাইল : 01768371219
No comments:
Post a Comment