একুশের চেতনা বহুকাল ধরে নানাভাবে বিকৃত হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কিন্তু বেশ কবছর হল অমর একুশে গ্রন্থমেলাও বিক্রিত হয়েছে এবং বিকৃত হচ্ছে বিভিন্ন আকারে। অভিনব উপায় বের করে একটি চক্র এই অমর একুশে গ্রন্থ মেলাকে কেন্দ্র করে চালাচ্ছে অনেক ধরনের বেচাকেনা এবং বাণিজ্য। কর্পরেট বাণিজ্যের নগ্ন প্রচারণা। গণমাধ্যমগুলো হয়েছে এতে তাদের হাতিয়ার। বেসরকারী গণমাধ্যমগুলোর পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনও এই অপনীতি আর অপসংস্কৃতির শিকার হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানে প্রবাসী ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটনের একটা ছড়া উপস্থিত ১৭ জন শ্রোতা-দর্শককে মুগ্ধ করেছে। এতে উপস্থিত কবির সংখ্যাও ছিল মাত্র দশজন। রিটনের ছড়ায় শতাধিক বিক্রি হওয়া সরকারী-বেসরকারী-শিল্প-বানিজ্য এবং গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ ছিল। এমন কী ছড়ায় উল্লেখ আছে, ইনাদিং গোপনে কেউ কেউ নাকি নিজের মাকেও বিক্রি করছে। টেলিভিশনে যেমন বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন-সংবাদের অনুষ্ঠান, রিটনের ভাষায়। খুব সাহসী উচ্চারণ, সময় উপযোগী ছড়া এটি সন্দেহ নেই। সাহিত্যের উৎকর্ষে ছড়াটি কতটা সমৃদ্ধ তা উল্লেখ না করেই বলছি, একজন নগন্য ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে, শ্রোতা ও দর্শক হিসেবে-ছড়াটি আমি ব্যক্তিগতভাবে উপভোগ করেছি। উল্লেখ্য, রিটন নিজেও এমন একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, পরিচালক যার শিরোনাম-আইএফআইসি বই মেলা সরাসরি ২০১৫, চ্যানেল আই যা প্রতিদিন অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কোটি কোটি দর্শক দেশ-বিদেশে দেখছে এবং শুনছে? আইএফআইসি বইমেলা নামে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে কোন কালে কোন বইমেলা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। ইতিহাসের
পাতাতেও তা খুঁজে পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে অমর একুশে গ্রন্থমেলা তাহলে কোনটি? ঠিক তেমনিভাবে ক্যামব্রিয়ান বইমেলা প্রতিদিন প্রচার করা হচ্ছে একই প্রাঙ্গন থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে। এমনি আরও সরকারি-বেসরকারিবাণিজ্য ও অর্থপ্রতিষ্ঠান, এনজিও নানা নামে বইমেলা প্রচার করে চলেছে?বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ টাকার বিনিময়ে অমর একুশের গ্রন্থমেলাকে বিক্রি করেছে, একুশের চেতনাকে করেছে ভুলুন্ঠিত, নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শকে দিয়েছেবিসর্জন-এতে যে পাপ হয়েছে, এর শাস্তি কী?কোটি কোটি কোমলমতি শিশু দর্শক এবং সরলপ্রাণ অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত আমজনতা শ্রোতা-দর্শক প্রতিদিন অমর একুশে গ্রন্থমেলার পরিবর্তে এক বা একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত বইমেলা সরাসরি বা বইমেলা প্রতিদিন
দেখছে ও শুনছে। এক্ষেত্রে অমর একুশে গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষের কি কোনই দায়দায়িত্ব নেই? সেদিন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান বললেন,”উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলা একাডেমির একাধিক পাপ আছে। একটি বড় পাপ হচ্ছে স্বৈরাচারী আইয়্যুব খানকে বাংলা একাডেমি একসময় খুব প্রশংসা করেছে। অপর পাপটি হচ্ছে- ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কবি জসীম উদ্দীনসহ সেসময় অনেককেই বাংলা একাডেমি পদক দেওয়া হয়নি? এছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিকেও বাংলা একাডেমি সম্মানিত করেছে?”- বলতে দ্বিধা নেই লুৎফর রহমান রিটনের মত নিজে অপরাধী এবং পাপী হয়েও মহাপরিচালক বাংলা একাডেমির বড় বড় পাপের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। এটাই কি আজকের জাতীয় চরিত্র? একটা সময়ে মুখে মুখে উচ্চারিত হত জাতির মননের প্রতীক বাংলা একাডেমি। এটিকে রেখেই কি আরেকটি শ্লোগান রাখা যেতনা? নিজের দেওয়া নতুন শ্লোগান রেখে আগেরটিকে বাদ দিয়ে বর্তমান মহাপরিচালক কি আরো একটি বড় পাপ করেননি? ব্যারিষ্টার সাদিয়া আমরিনকে বলেছি এই নীতি, আদর্শ ও একুশের চেতনা বিরোধী কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আইনের আশ্রয় নিতে। জানিনাতিনি বা অন্য কেউ এই কাজে এগিয়ে আসবেন কিনা? কেননা, সময়টা এখন বিক্রি হওয়ার। যেমন বিক্রিত প্রবাসী ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন এবং বাংলা একাডেমির
মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান। বাস্তবতা হল এখন যে যত বেশী বিক্রি হতেপারবে, সে তত বেশী প্রতিষ্ঠিত, স্বীকৃত, সম্মানিত এবং ক্ষমতাবান হবে। জনগন যাদের কাছে লাঞ্চিত, বঞ্চিত, অপমানিত এবং পদদলিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আলী নিয়ামত: সম্পাদক, এলামনাই নিউজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
পাতাতেও তা খুঁজে পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে অমর একুশে গ্রন্থমেলা তাহলে কোনটি? ঠিক তেমনিভাবে ক্যামব্রিয়ান বইমেলা প্রতিদিন প্রচার করা হচ্ছে একই প্রাঙ্গন থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে। এমনি আরও সরকারি-বেসরকারিবাণিজ্য ও অর্থপ্রতিষ্ঠান, এনজিও নানা নামে বইমেলা প্রচার করে চলেছে?বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ টাকার বিনিময়ে অমর একুশের গ্রন্থমেলাকে বিক্রি করেছে, একুশের চেতনাকে করেছে ভুলুন্ঠিত, নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শকে দিয়েছেবিসর্জন-এতে যে পাপ হয়েছে, এর শাস্তি কী?কোটি কোটি কোমলমতি শিশু দর্শক এবং সরলপ্রাণ অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত আমজনতা শ্রোতা-দর্শক প্রতিদিন অমর একুশে গ্রন্থমেলার পরিবর্তে এক বা একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত বইমেলা সরাসরি বা বইমেলা প্রতিদিন
দেখছে ও শুনছে। এক্ষেত্রে অমর একুশে গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষের কি কোনই দায়দায়িত্ব নেই? সেদিন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান বললেন,”উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলা একাডেমির একাধিক পাপ আছে। একটি বড় পাপ হচ্ছে স্বৈরাচারী আইয়্যুব খানকে বাংলা একাডেমি একসময় খুব প্রশংসা করেছে। অপর পাপটি হচ্ছে- ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কবি জসীম উদ্দীনসহ সেসময় অনেককেই বাংলা একাডেমি পদক দেওয়া হয়নি? এছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিকেও বাংলা একাডেমি সম্মানিত করেছে?”- বলতে দ্বিধা নেই লুৎফর রহমান রিটনের মত নিজে অপরাধী এবং পাপী হয়েও মহাপরিচালক বাংলা একাডেমির বড় বড় পাপের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। এটাই কি আজকের জাতীয় চরিত্র? একটা সময়ে মুখে মুখে উচ্চারিত হত জাতির মননের প্রতীক বাংলা একাডেমি। এটিকে রেখেই কি আরেকটি শ্লোগান রাখা যেতনা? নিজের দেওয়া নতুন শ্লোগান রেখে আগেরটিকে বাদ দিয়ে বর্তমান মহাপরিচালক কি আরো একটি বড় পাপ করেননি? ব্যারিষ্টার সাদিয়া আমরিনকে বলেছি এই নীতি, আদর্শ ও একুশের চেতনা বিরোধী কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আইনের আশ্রয় নিতে। জানিনাতিনি বা অন্য কেউ এই কাজে এগিয়ে আসবেন কিনা? কেননা, সময়টা এখন বিক্রি হওয়ার। যেমন বিক্রিত প্রবাসী ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন এবং বাংলা একাডেমির
মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান। বাস্তবতা হল এখন যে যত বেশী বিক্রি হতেপারবে, সে তত বেশী প্রতিষ্ঠিত, স্বীকৃত, সম্মানিত এবং ক্ষমতাবান হবে। জনগন যাদের কাছে লাঞ্চিত, বঞ্চিত, অপমানিত এবং পদদলিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আলী নিয়ামত: সম্পাদক, এলামনাই নিউজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
No comments:
Post a Comment