http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Thursday, September 22, 2011

Pressuring to take statement from:সংগ্রাম সম্পাদক ও জামায়াত নেতাদের চাপপ্রয়োগে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম, অধ্যাপক তাসনীম আলম ও সংগ্রাম সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট লেখক আবুল আসাদসহ জামায়াতের প্রথম সারির নেতাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষের সময় গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দ্রুত বিচার মামলায় রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তবে রমনা থানা পুলিশ রিমান্ডে নিলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্য। তাদের রমনা থানা হেফাজতে না রেখে গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। আবুল আসাদ সোমবার রাতে গ্রেফতারের পর কোথায় ছিলেন, পরিবারের সদস্যরা ২৪ ঘণ্টায়ও তা জানতে পারেনি। একইভাবে জামায়াত নেতাদেরও প্রথম দফায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। তবে পুলিশের দাবি রমনা থানা হাজতে জায়গা না থাকায় শীর্ষনেতাসহ বেশ কয়েকজনকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে ও ক্যান্টনমেন্ট থানা হাজতে নেয়া হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জামায়াত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করছে গোয়েন্দারা। গ্রেফতারের পরই শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। এর মধ্যে এটিএম আজহারকে পুলিশ গোপনে একদফা চিকিত্সাও করিয়েছেন বলে জানা যায়। সূত্রমতে, রমনা ও পল্টন থানা এলাকার পৃথক মামলায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে গত মঙ্গলবার ৭১ জনকে রিমান্ডে আনা হয়। এর মধ্যে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক তাসনীম আলম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ইজ্জত আলী, আবদুর রব ও আবদুস শহীদ নাসিম রয়েছেন। রমনা থানায় তাদের তিন দিনের রিমান্ড আজ শেষ হচ্ছে।
গত সোমবার রাজধানীতে জামায়াতের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় রাতে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতাসহ প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় ৭টি ও পল্টন থানায় ২টিসহ মোট ৯টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে চারটি মামলার বাদী পুলিশ এবং পাঁচটির বাদী পুলিশের বাছাই করা কিছু ব্যক্তি। ওই ৯টি মামলায় পুলিশ জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামসহ ৩৩৫ জনকে গ্রেফতার করে। গত মঙ্গলবার এদের মধ্যে দ্রুত বিচারসহ চার মামলায় ১৮৩ জনকে ১৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বাকিদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
রমনা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, থানায় একসঙ্গে ১৯দিন রিমান্ডপ্রাপ্ত বিপুলসংখ্যক ব্যক্তির স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় মঙ্গলবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এসব নেতাকর্মীকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এক গ্রুপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শেষ হলে অন্য গ্রুপকে রিমান্ডে আনা হবে। বুধবার বিকাল থেকেই প্রথম গ্রুপের ৭১ জনকে রমনা থানায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পল্টন থানার ওসি শহিদুল হক জানান, পল্টন ও রমনা থানার মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা একই ব্যক্তি। এজন্য রমনা থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে তাদের পল্টন থানায় আনা হবে। হরতালসহ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া জামায়াতের নেতাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার তাদের প্রথম গ্রুপকে আনা হবে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রিমান্ডে আনা জামায়াতের নেতাকর্মীদের রমনা থানার পাশাপাশি দফায় দফায় ডিবি অফিসে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। এছাড়া ডিবির জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ইন্ধন দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে সোমবার রাতেই আটক করে রমনা থানা হাজতের ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে প্রায় ৪০জনের সঙ্গে রাখা হয়। পরে তাকে থানা থেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন দুপুর ২টায় আদালতে নেয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ১০ ঘণ্টা তাকে একটি কক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। এর পর বিকালে আদালত রিমান্ডের আদেশের পর তাকে কারাগারে না থানায় রাখা হয়েছে, তা তার পরিবারের সদস্যরা অনেক চেষ্টা করেও জানতে পারেননি। পারিবারিক সূত্র জানায়, সম্পাদক আবুল আসাদ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। কয়েক দিন ধরে তিনি ওষুধ সেবনও করতে পারছেন না। এতে তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন। গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আবুল আসাদকে গোয়েন্দারা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে। প্রথম দিনে তাকে সোমবারের সংঘর্ষ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান। তিনি বার বার বলছেন, জামায়াত পুলিশের তাত্ক্ষণিক সময়ে সংঘটিত ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নই। তিনি একটি পত্রিকার সম্পাদক। পত্রিকা সম্পাদনা ও লেখালেখির মাধ্যমে দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেন। কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি অমূলক বলে তিনি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে জানিয়েছেন।

No comments: