লেখক: পান্থজন | মঙ্গল, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১১, ২৯ ভাদ্র ১৪১৮
মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা এবার কেড়ে নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের একমাত্র পুত্রকে। বড়ো মর্মস্পর্শী এ মৃত্যু। আমরা অনেকেই টিভির পর্দায় সন্তানহারা বাবা-মার বুকফাটা আর্তনাদ দেখেছি। দেখেছি সন্তানের কফিন কাঁধে শোকজর্জরিত এক বিপন্ন পিতাকে। জীবদ্দশায় যুবক পুত্রের পাহাড়ের মতো ভারী কফিন বহন করা যে কতো কঠিন সে কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন। শুধু তাই নয়, মাত্র ৭ মাস বয়সী যে অবুঝ শিশুটি চিরতরে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হলো কিংবা সদ্যবিবাহিতা যে-নারী ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্নের মতো অকস্মাত্ স্বামীহারা হলেন তাদেরকে সারা জীবন এ গুরুভার বয়ে বেড়াতে হবে। কিছুতেই তাদের এ-ক্ষতি পূরণ হবে না।
লক্ষণীয় যে, পর্বতপ্রমাণ শোকের মধ্যেও প্রতিমন্ত্রীর কণ্ঠে যে-আকুতিটি সবকিছুকে ছাপিয়ে উঠেছে তা হলো, আর কোনো বাবা-মাকে যেন এভাবে সন্তানহারা হতে না হয়। এ আকুতি প্রতিমন্ত্রীর একার নয়, ভুক্তভোগী প্রতিটি পরিবারের, প্রতিটি মানুষের। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মেধাবী চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের শোকবিহ্বল স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক মিশুক মুনীরের স্ত্রী-সন্তানের মুখেও আমরা একই কথা শুনেছি। কিন্তু এতে যে কোনো কাজ হচ্ছে না তাও কারো অজানা নয়। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। থামার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা হতাহতের সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ-সংবলিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সরকার ও জনগণকে সচেতন করার যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। দিচ্ছেন নানা পরামর্শও। কিছুদিন আগেও সাধারণ মানুষ ব্যাপক আশা ও আগ্রহ নিয়ে তা পড়তেন। এ নিয়ে মেতে উঠতেন তর্কবিতর্কে। তবে ইতোমধ্যে তাদের সেই আশা ও আগ্রহ দুটোই প্রায় উবে গেছে। মানুষ যখন কোনো বিষয়ে আগ্রহ ও উদ্যম হারিয়ে ফেলে তখন বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, সমস্যা কতো জটিল এবং সে তুলনায় তা সমাধানের উদ্যোগ কতো অপ্রতুল।
সাধারণ মানুষ যখন নিজের চোখেই দেখছে যে, সড়ক-মহাসড়কগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে এবং প্রতিদিনই তাদের স্বজন বা প্রিয়জনদের কেউ না কেউ তার অসহায় শিকারে পরিণত হচ্ছে, তখন পরিসংখ্যানের প্রয়োজনইবা কী! কথায় আছে ‘অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর’। আমাদের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। তবে একটি অভিযোগ আজকাল প্রায় শোনা যায়—হয়তো সংবাদপত্রে কাজ করি বলে আমাকে অভিযোগটি বেশি করে শুনতে হয়। অভিযোগটি হলো, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন নানা বয়সের নানা পেশার বহু মানুষ হতাহত হলেও তা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য হয় না। শুধু নামিদামি কেউ দুর্ঘটনার শিকার হলে মিডিয়ায় ব্যাপক হৈ চৈ হয়। সোচ্চার হয়ে ওঠে নাগরিক সমাজ। অভিযোগটি একেবারে ভিত্তিহীন নয়। সব দুর্ঘটনার খবর যে গণমাধ্যমে আসে না সেটা আমি নিজে জানি। তবে যেটুকু আসে তাও আতঙ্কিত হওয়ার মতো। আর সেটা জানার জন্য কোনো গবেষণা বা পরিসংখ্যানের প্রয়োজন নেই। এর জন্য যে কোনো তারিখের জাতীয়ভিত্তিক একটি সংবাদপত্রই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হতে পারে।
আমার সামনে এখন ১০ সেপ্টেম্বরের একটি সংবাদপত্র। সেখানে সড়ক দুর্ঘটনার খবর আছে দু’টি। প্রথমটির শিরোনাম হলো, ‘পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রভাষকসহ নিহত ৯’। আর দ্বিতীয়টি হলো ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি আবু তাহের মারা গেছেন’। একদিনে মোট নিহতের সংখ্যা ১০। আহতের সংখ্যা ৮৮। তার মধ্যে ২ পুলিশ সদস্যসহ ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রসঙ্গত দুর্ঘটনার ধরনটিও লক্ষ্য করা যেতে পারে। নিহত ১০ জনের মধ্যে ৪ জনই নিহত হয়েছেন ট্রাক চাপা পড়ে। তাদের মধ্যে দু’জন মোটর সাইকেল আরোহী। একজন সিএনজি আরোহী। আর ৭ বছর বয়সী একটি শিশু নিহত হয়েছে রাস্তা পারাপারের সময়। অবশিষ্টদের প্রায় সকলেই হতাহত হয়েছেন বাস উল্টে, বাস খাদে পড়ে কিংবা দু’টি বাসের মুুখোমুখি সংঘর্ষে। আরও লক্ষণীয় যে, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যাদেরকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় সেই চালক ও পুলিশ সদস্যরাও আছেন হতাহতদের তালিকায়। তার অর্থ হলো, সড়ক দুর্ঘটনার মহামারী থেকে কেউ নিস্তার পাচ্ছেন না। পাওয়ার কথাও নয়। নগর পুড়লে যে দেবালয়ও রক্ষা পায় না সে কথা তো একজন বাঙালি কবিই বলে গেছেন শতাধিক বছর আগে।
নানা কারণে সব মৃত্যু আমাদের সমভাবে নাড়া দেয় না—যদিও কোনো মৃত্যুই কম মর্মস্পর্শী কিংবা স্বজনদের জন্য কম শোকের নয়। এ লেখার শুরুতে প্রতিমন্ত্রীর একমাত্র পুত্রের মৃত্যুকে ঘিরে যে করুণ আবহটি তুলে ধরা হয়েছে, প্রতিটি অকাল বা অপঘাত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অনুরূপ বা তার চেয়ে বেদনাদায়ক পরিস্থিতি খুঁজে পাওয়া যাবে। দরিদ্র পরিবারে এ ধরনের মৃত্যুর অভিঘাত আরও করুণ, আরও ভয়াবহ। বিশেষ করে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটি দুর্ঘটনার শিকার হলে শোকের তীব্রতাকেও ছাপিয়ে ওঠে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। গোটা পরিবারকেই তখন পথে বসতে হয়। এ ধরনের পরিবারের সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় যতো মানুষ হতাহত হচ্ছে তাদের বড়ো অংশই এ শ্রেণীভুক্ত। কিন্তু তা যেমন সংবাদপত্রের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম হয় না, তেমনি এ নিয়ে তেমন হৈ চৈও শোনা যায় না। কারণ প্রথমত বিষয়টি সকলেরই গা সহা হয়ে গেছে; দ্বিতীয়ত, আগেই বলেছি যে, অব্যাহত প্রতিকারহীনতার কারণে এ নিয়ে মানুষ আগ্রহ ও উদ্যম দুটোই হারিয়ে ফেলেছে। ব্যতিক্রম এটুকুই যে, তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মতো খ্যাতিমান ও সৃষ্টিশীল মানুষের মৃত্যু কিছু সময়ের জন্য হলেও এতে ব্যত্যয় ঘটায়। সবাই নড়েচড়ে বসেন।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দীর্ঘ এক বছর পর যোগাযোগমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত রোববার। সেখানে নৌপরিবহন মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পরিবহন খাতের নেতৃবৃন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। সভায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে একগাদা সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। সেই সব সিদ্ধান্ত আদৌ বাস্তবায়িত হবে কিনা কিংবা আরেকটি বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটলে ভবিষ্যতে এ নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে কিনা সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। দেশে যে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল নামে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থা আছে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর মারা না গেলে সেটা হয়তো কারো মনেও পড়তো না। খোদ নৌ পরিবহন মন্ত্রীর কণ্ঠেও একই খেদোক্তি শোনা গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির চাপে সরকার বাহাদুর যেমন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন, তেমনি নিরাপদ সড়ক এবং স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চেয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছে নাগরিক সমাজের একটি অংশও। গত কিছুদিন ধরে তারা সভা-সমাবেশ করছেন। তুলে ধরছেন বিভিন্ন দাবি। এটাও যে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মৃত্যুর তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়াজাত তাতে সন্দেহ নেই।
প্রশ্ন হলো, স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা কে দেবে? কে নিশ্চিত করবে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে নিত্য চলমান মানুষের জীবনের নিরাপত্তা? নাগরিক সমাজের সকল দাবি ও প্রত্যাশা মূলত সরকারের কাছে। তারা চায় সরকার জনগণের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিক। নিশ্চিত করুক সড়ক নিরাপত্তা। কিন্তু সরকার কি তা পারবে? সেই সংকল্প ও সামর্থ্য কি তাদের আছে? এ ব্যাপারে আমি নিজে ততোটা সংশয়মুক্ত নই। এটা ঠিক যে, জনমতের চাপে সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। দীর্ঘদিন পর সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা হয়েছে। প্রায় ৭ ঘন্টা স্থায়ী এ-সভায় বহু ভালো ভালো সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। বলা হয়েছে, মহাসড়ক থেকে হাটবাজার ও নসিমন-করিমনের মতো ধীরগতির যানবাহন তুলে দেয়া হবে। ব্যবস্থা নেয়া হবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকদের বিরুদ্ধে। বন্ধ করা হবে ওভারটেকিং, ওভারলোডিং এবং ওভারস্পিড। পাশাপাশি, সড়ক-মহাসড়কের বিপজ্জনক বাঁকসহ বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সারানো হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। সিদ্ধান্তগুলো শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আগেও একাধিকবার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি। এমনকী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রাজধানীতে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল পদ্ধতি এবং লেনপ্রথাসহ কিছু নিয়ম কার্যকর করার যে উদ্যোগ নিয়েছিল তাও মুখ থুবড়ে পড়েছে সঙ্গে সঙ্গে।
সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণগুলো কমবেশি সকলেই জানেন। অদক্ষ চালক ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ বেশিরভাগ দুর্ঘটনার জন্য অদক্ষ চালক এবং ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনকে দায়ী বলে মনে করা হয়। এটা একেবারে অযৌক্তিকও বলা যাবে না। তবে দুর্ঘটনার যাবতীয় দায়দায়িত্ব তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়াটাও যুক্তিযুক্ত নয়। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য চালকের অসতর্কতা বা বেপরোয়া মনোভাবকে দায়ী বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পুত্রের মৃত্যুর জন্য আমরা কাকে দায়ী করবো? একটি কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি দুর্ঘটনায় পতিত হন। পুলিশ বলছে, গাড়ির গতি বেশি ছিল বলে তিনি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য পথচারীদের মারাত্মক অসচেতনতা, যত্রতত্র হাটবাজার স্থাপন কিংবা অপরিকল্পিত মহাসড়কের ভূমিকাও কোনো অংশে কম নয়। অতএব, সড়ক দুর্ঘটনা যে মহামারী আকার ধারণ করেছে তার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কোনো একটি কারণ অথবা পক্ষকে দায়ী করা যাবে না। আর যদি করতেই হয়, তাহলে দায়ী করতে হবে আমাদের বেপরোয়া মানসিকতাকে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, চালক, যাত্রী, পথচারী, পুলিশ কেউই নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করেন না। বরং নিয়ম না মানাটাকেই বাহাদুরি বলে বিবেচনা করা হয়। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, সড়ক-মহাসড়কে রাজকতা তথা আইনের শাসন নিশ্চিত করা যাদের দায়িত্ব তারা আরও বেপরোয়া। সরষের মধ্যে ভূত থাকলে সেই ভূত তাড়ানো সহজ নয়। অবস্থা এমন যে, লোম বাছতে গেলে পুরো কম্বলই উজাড় হয়ে যাবে।
সড়ক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবত্ যে মহাবিশৃঙ্খলা চলছে তা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এটা আমাদের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতারই অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে আমার ধারণা। একটি উদাহরণ এখানে তুলে ধরা যেতে পারে। এখন বিনা পরীক্ষায় চালকদের প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার লাইসেন্স দেয়া নিয়ে হৈচৈ চলছে। অথচ ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত চালকদের ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫১৬টি লাইসেন্স দেয়া হয়েছে একই প্রক্রিয়ায়। কখনও পরিবহন নেতাদের চাপে, কখনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে এবং কখনও বা অন্য কোনো কারসাজির মাধ্যমে এটা করা হয়েছে। এ খবর সমপ্রতি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। আমার জানা মতে, কেউ তার প্রতিবাদও করেননি। সড়ক ব্যবস্থাপনার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ ধরনের জটিল সমস্যা রয়েছে। এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসা সহজ নয়। আর সরকার চাইলেই যে সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে না তার উদাহরণও আমাদের হাতের কাছেই আছে। গত এক দশকে প্রবল প্রতাপশালী সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ একাধিক সরকার রাজধানীর রাস্তা থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আর নির্বাচিত সরকারের সীমাবদ্ধতা বা দায় তো আরও বেশি। তাদেরকে সবার কথাই শুনতে হয়। আমার মনে হয়, দ্রুত ফল পেতে হলে একটা বড়ো ধরনের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সেই উদ্যোগে চালক, মালিক, জনগণ ও সরকার সকলেরই সক্রিয় ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দরকার। প্রবল জনসচেতনতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ ছাড়া এটা সম্ভব হবে বলে তো মনে হয় না। তবে সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর এ মহামারী থামানো না গেলে কারো জীবনই যে নিরাপদ নয় তা ইতোমধ্যে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে।
No comments:
Post a Comment