http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Tuesday, September 27, 2011

DEMAND OF OPPOSITION LEADER BEGUM KHALEDA ZIA, BANGFLADESHচাই তত্ত্বাবধায়ক ॥ খালেদা জিয়ার দাবি ০ জনসভা ছাত্রশিবিরের সভাপতির বক্তব্য দিয়ে শুরু ০ খালেদা







বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ বলে অভিযোগ করে অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্ববহাল ও পদত্যাগ করে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ছাড়া এ দেশে কোন নির্বাচন হবে না। মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে চারদলীয় জোটের বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ৩ বিভাগে রোডমার্চ ও জনসভা করার ঘোষণা দেন। এর মধ্যে রয়েছে আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা-সিলেট রোডমার্চ করে ১১ অক্টোবর সিলেটে জনসভা। ১৮ অক্টোবর ঢাকা থেকে বগুড়া পর্যন্ত রোডমার্চ করে সেদিনই বগুড়ায় জনসভা ও ১৯ অক্টোবর বগুড়া থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ করে রাজশাহীতে জনসভা এবং ২৫ অক্টোবর ঢাকা থেকে রোডমার্চ করে ফেনীতে গিয়ে জনসভা এবং ২৬ মার্চ ফেনী থেকে রোডমার্চ করে চট্টগ্রামে গিয়ে জনসভা করা।
খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার যাকে তাকে জঙ্গী বানাচ্ছে। জঙ্গী ধরার নামে সাজানো নাটক করছে। বিদেশীরাও এখন সরকারের জঙ্গী ধরার নাটক সম্পর্কে বুঝে গেছে। তাই এ নাটক করে এ সরকার আর বেশিদিন চলতে পারবে না।
জনসভায় প্রদত্ত বক্তব্যে জনগণকে বিএনপির ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি দূর করব। শেয়ারবাজারকে ঠিক করা হবে। প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করা হবে। বিএনপি জনগণের আশা-আকাঙ্ৰার প্রতিফলন ঘটিয়ে সংবিধানে সংশোধনী আনবে। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা হবে।
দেশের বর্তমান অবস্থাকে আওয়ামী লীগ শাসনামলের ১৯৭২-৭৫ সালের সঙ্গে তুলনা করে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে ১৯৭২-৭৫ সালের মতো লুটপাট হচ্ছে। সরকারী দলের লোকেরা লুটপাট করলেও তাদের কোন বিচার হচ্ছে না। তারা বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে রেখেছে। সেখানে ২ রকমের বিচার হয়। বিচারাঙ্গনে গেলে আওয়ামী লীগ হলেই সব মাফ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে তিনি বলেন, চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে সরকার। একবছরে তেলের দাম দ্বিগুণ করা হয়েছে। সারাবিশ্বে তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে বাড়ানো হচ্ছে। অথচ বিএনপি আমলে ভর্তুকি দিয়ে তেলের দাম কমিয়ে রাখা হয়েছিল।
নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়কের ওপর তৈরি করা সভামঞ্চে পৌনে ৪টায় এসে পেঁৗছেন খালেদা জিয়া। এ সময় মুহুমর্ুহু করতালি দিয়ে নেতাকর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। বিকেল ৫টা ৫ মিনিট থেকে শুরম্ন করে টানা একঘণ্টা বক্তব্য রাখেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা, বিগত বিএনপি আমলের উন্নয়নের চিত্র এবং আগামীতে বিএনপি ৰমতায় গেলে কি কি করা হবে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয় উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, তিন বছরে নতুন কোন শিল্প স্থাপন হয়নি। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গ্যাস বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের বস্ত্র শিল্প ধ্বংস করে ভারত থেকে অবাধে সুতা আমদানি করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ভাল বলে সরকার যে প্রচারণা চারাচ্ছে তার বিরোধিতা করে সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, অর্থনীতির অবস্থা ভাল হলে অর্থমন্ত্রী বিদেশীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ান কেন। দেশে অপরাধের পরিমাণও দিনদিন বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই শেয়ারমার্কেট কু্য হয়। এবার প্রায় ৩৪ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে গেছে। তারা টাকা দেশেও রাখেনি। ডলার করে এ টাকা বিদেশে পাচার করায় ডলারের মূল্যও বেড়ে গেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ স্বাভাবিকভাবে ন্যায়বিচার আশা করে। কিন্তু আজকে ন্যায়বিচার বলে কিছু নেই। প্রশাসনে দলীয়করণ করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ৪৬০ জন মেধাবী অফিসারকে ওএসডি করা হয়েছে। এঁরা সিনিয়ির, ভাল, নিরপেক্ষ অফিসার। এঁরা আওয়ামী লীগের দালালি করে না বলে ওএসডি করা হয়েছে। আর দলীয় অযোগ্য লোকদের প্রশাসনে বসিয়ে দেয়ায় প্রশাসন অচল হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এ সরকার প্রতিদিন সকালে আলস্নাহর নাম নিয়ে মিথ্যা কথা বলা শুরম্ন করে এবং সারা দিন সেই মিথ্যাই চলতে থাকে।
সরকার ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায় বলে মনত্মব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, কিন্তু ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকা যায় না।
তিনি বলেন, 'দ্রব্যমূল্য লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিনত্মা করে না। সরকার শুধু নিজেদের নিয়েই ব্যসত্ম। দেশে সন্ত্রাস, লুটপাট ও ত্রাসের রাজত্ব চলছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ দেশে সন্ত্রাস চালিয়ে এক ভীতিকর অবস্থা তৈরি করেছে। দেশের লুটপাট ও টেন্ডারবাজি চলছে। কিন্তু সরকারের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। তিনি নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে বলেন, আওয়ামী লীগের অতীত ইতিহাস জানা দরকার। তা না হলে আওয়ামী লীগকে বুঝতে কষ্ট হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী অবশ্যই বাতিল করতে হবে। এ দেশে দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
এরশাদকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। নিরপেৰ নির্বাচনের জন্য তিনি কিছু দাবি পেশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল, সংবিধানে ভোটের অধিকার পুনপর্্রতিষ্ঠা, আলোচনার মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং পদ্ধতি বাতিল করা।
আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কি কি করবে তার একটি ফিরিসত্মিও তুলে ধরে খালেদা জিয়া বিএনপির ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে জনগণকে উদ্দেশ করে বলেন, ৰমতায় গেলে আমরা দুর্নীতি দূর করব। শেয়ারবাজারকে ঠিক করা হবে। প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করা হবে। জনগণের আশা-আকাঙ্ৰার প্রতিফলন ঘটিয়ে সংবিধানে সংশোধনী আনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী দেশে অশানত্মি সৃষ্টি করছে বলে মনত্মব্য করে তিনি বলেন, আপনি দেশে অশানত্মি সৃষ্টি করে এখন বিশ্বশানত্মির মডেল দিচ্ছেন। এটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার পর ৪০ হাজার মানুষ হত্যা করেছে। তখন আপনার (শেখ হাসিনা) শানত্মি প্রক্রিয়া কোথায় ছিল। হরতালের সময়ে বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। আপনার শাসনামলে অনেক মানুষ হত্যা-গুম করা হয়েছে। তখন এই শানত্মি প্রক্রিয়া কোথায় থাকে।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের মানুষ আজ ভাল নেই। চরম দুরাবস্থায় রয়েছে তারা। অথচ প্রধানমন্ত্রী দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মানুষের কষ্টের কথা ভাবছেন না। তাদের ভোট ব্যাংক সংখ্যালঘুদের ওপরও অত্যাচার নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তাদের জায়গা দখল করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া করা হয়েছে। পুলিশ দলীয় ক্যাডার হিসেবে কাজ করছে। এর বিচার একদিন হবে। সরকারী দলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, পুলিশ তুলে নিয়ে রাসত্মায় নামুন। দেখুন রাজপথ কার দখলে থাকে।
দুপুর ২টায় কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে চারদলীয় জোটের জনসভা শুরম্ন হয়। কোরান তেলাওয়াত শেষে দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জনসভার প্রথম বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ডা. ফখরম্নদ্দিন মানিক। এরপর বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
দুপুরের আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বিএনপি-জামায়াতসহ চার দলের নেতাকর্মীরা বাস-ট্রাকযোগে রাজধানীর দিকে আসতে থাকে। নয়াপল্টনের কাছাকাছি এসে তারা মিছিল সহকারে সভাস্থল নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরম্ন করে। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন বহন করে। কোন কোন মিছিল আসে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে বাজাতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনসভাস্থলে লোকসমাগমও বাড়তে থাকে। জনসভাকে কেন্দ্র করে বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, কাকরাইল মোড় হয়ে শানত্মিনগর, ফকিরাপুল মোড়, পুরানা পল্টন পর্যনত্ম মাইক লাগানো হয়। কয়েকটি স্থানে বড় পর্দা লাগানো হয় জনসভা প্রচার করার জন্য। বিকেল চারটায় জনসভার প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে আসেন। এ সময় জনসভাস্থল ছাড়িয়ে কাকরাইল, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, পুরানা পল্টন, শানত্মিনগর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি পর্যনত্ম চারদলীয় জোটের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। খালেদা জিয়া মঞ্চে উঠলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা করতালি ও সেস্নাগানে সেস্নস্নাগানে এলাকা মুখরিত করে তোলে। বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে বক্তব্য শুরম্ন করে এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি বিভিন্ন ৰেত্রে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে সরকার পতন আন্দোলনে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় ও এর আশপাশের ভবনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবি টাঙ্গানো হয়। দলের বিভিন্ন নেতাকর্মর্ীর মুক্তির দাবি সংবলিত ব্যানারও দেখা যায়। জনসভাস্থলের আশপাশে রাসত্মার মোড়ে মোড়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি দিয়ে সাজানো হয়।
জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজধানী বিশেষ করে জনসভাস্থল ও এর আশ-পাশ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও র্যাবের সতর্ক অবস্থান লৰ্য করা গেছে। জনসভা মঞ্চ ও এর আশপাশে ডগ স্কোয়াড দিয়ে তলস্নাশি করা হয়।
চারদলীয় জোটের জনসভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার পুরো রাজধানীতে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। জনসভা সংলগ্ন রাসত্মাগুলোয় দুপুরের আগে থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে রাজধানীর শাহবাগ, মালিবাগ, বাংলামোটর, ফার্মগেট, মহাখালী, মগবাজার, গুলিসত্মান, কমলাপুর এলাকায় তীব্র যানজটে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগানত্মি পোহাতে হয়।
জনসভায় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ বলেন, জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক দল। সহনশীলতা ও সহমর্মিতায় বিশ্বাস করে। অথচ সরকার পাইকারিভাবে জামায়াতের নেতাকর্মীদের আটক করছে। আমাদের শানত্মিপূর্ণ কর্মসূচী করতে দেয়া হয় না। তিনি বলেন, আমরা বৈঠক করলে বলে গোপন বৈঠক। বই পেলে বলে জঙ্গী বই। তাহলে বলে দেন, কোন কোন বই জঙ্গী বই। তিনি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকা-ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে চারদলীয় জোটকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, দেশ বর্তমানে চরম সঙ্কটে আছে। কাজেই সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে এক্যবদ্ধ হয়ে সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
জনসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ জনসভা প্রমাণ করে, বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের কোন আস্থা নেই। এ সরকার সব ৰেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে আজ নীরব দুর্ভিৰ চলছে।
জনসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর বলেন, শেখ হাসিনা ১৩৭ জন সদস্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনি সেখানে সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাঁর অপমানজনক বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের ১৬ কোটি মানুষকে অপমান করেছেন। ফখরম্নল বলেন, ওই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছেন- বিরোধী দলের সঙ্গে কোন সমঝোতা হতে পারে না। তাঁর এ কথার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। অতীতেও তারা গণতন্ত্র চর্চা করেনি। এখনও করে না। আওয়ামী লীগ দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায়। শেখ মুজিবও দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিলেন উলেস্নখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, এখন শেখ হাসিনাও একদলীয় শাসন কায়েমের চক্রানত্ম করছে। কিন্তু দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের এ ষড়যন্ত্র মানবে না। এ সরকার ৰমতায় আসার পর গত তিন বছরে দেশের মানুষের দুঃখ- দুর্দশা চরম আকার ধারণ করেছে। তাই জনগণ এ সরকারের অপশাসন থেকে মুক্তি চায়। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বতমান সরকারের পতনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মাওলানা ইসাহাক বলেন, শেখ হাসিনা দেশে অশানত্মি সৃষ্টি করে এখন জাতিসংঘে শানত্মির ভাষণ দিচ্ছেন। তাঁর মুখে শানত্মির কথা মানায় না। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরম্নদ্ধে একের পর এক মামলা করছে। হামলা-মামলা ও লুটপাট চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। পুলিশকে লেলিয়ে দিযে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের একের পর এক গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের লাঠিপেটা করা হচ্ছে। পুলিশ বুকের ওপর বুট রাখতেও দ্বিধা করছে না। দেশের এ অবস্থা চলতে পারে না। তাই জালিম সরকারকে ৰমতা থেকে হটাতেই হবে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী আমির হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে প্রহসন করছে। বিচারের নামে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের কারাগারে আটক রেখেছে সরকার। অবিলম্বে আটক জামায়াত নেতাদের মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি। আযাদ আরও বলেন, বর্তমান সরকার সবৰেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের মানুষের আজ নাভিশ্বাস উঠেছে। অথচ সরকারের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। তাই ব্যর্থ সরকারের ৰমতায় থাকার কোন প্রয়োজন নেই। বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারের বিরম্নদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেন, চারদলীয় জোটের জনসভা যাতে সফল না হয় সেজন্য সবকিছুই করেছে সরকার। কিন্তু সব ধরনের বাধা-বিপত্তি উপেৰা করে দেশের মানুষ এ জনসভাকে সফল করেছে। আর আজকের জনসভা সফল করার মধ্যদিয়ে জনগণ সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে, এ সরকারের আর ৰমতায় থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা, গুমে মেতে উঠেছে। কিন্তু হত্যা, গুম করে জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।
জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আসম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব আমানউলস্নাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মজিবুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা ইসাহাক, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এলডিপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রেদোয়ান আহমেদ, বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আমিন ব্যাপারী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মর্তুজা, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিবিরের সভাপতি ফখরুদ্দিন মানিক প্রমুখ।

No comments: