http://themonthlymuktidooth.blogspot.com

Tuesday, September 27, 2011

SECRETARIES MEETINGS IN BANGLADESH

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) শতভাগ বাস্তবায়নে সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের ১২টি নির্দেশনা দেয়া হবে আজ বুধবার। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব নির্দেশনা দেবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ারভাইস মার্শাল (অব) একে খন্দকার। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কৰে সকালে চলতি অর্থবছরের আগস্ট পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা ও শতভাগ বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারনে এক জরুরী সভা ডাকা হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য এ সভায় সব মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সচিবদের যেসব নির্দেশনা দেয়া হবে তা হচ্ছে, অক্টোবরের মধ্যেই এডিপি বাস্তবায়নের কর্ম ও ক্রয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে তা অনুমোদন করতে হবে। অবশ্যই প্রকল্পের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে, এৰেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের সদস্যকে আহ্বয়ক করে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি কাজ করছে, এ কমিটিকে সহযোগিতা করতে হবে। ২০১২ সালের জুনের মধ্যে যেসব প্রকল্প সমাপ্তির লক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলোর জন্য অর্থ বরাদ্দ আগে নিশ্চিত করতে হবে। বৈদেশিক সহায়তা রয়েছে এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের ৰেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে, এৰেত্রে ম্যাচিং ফান্ড হিসেবে সরকারী তহবিলের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হলে সেসব প্রকল্প অগ্রাধিকার তালিকার বাইরে রাখতে হবে। এডিপির সবুজ পাতায় অন্তর্ভুক্ত অননুমোদিত প্রকল্প অনুমোদনের ৰেত্রে মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) আওতায় নির্ধারিত সিলিংয়ের মধ্য থেকে প্রকল্প প্রস্তাব করতে হবে। ২০১২ সালের মার্চের মধ্যেই প্রকল্পের সব টেন্ডারের ওয়ার্ক অর্ডার দিতে হবে। বাস্তবায়ন, পরীবিৰণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) যেসব প্রকল্প পরিদর্শন করে সুপারিশ পাঠাবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নের অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং এডিপি বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়মিত প্রকল্প পরিদর্শন করতে হবে, সেই সঙ্গে প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে। যেসব প্রকল্প সংশোধন করতে হবে সেগুলো অক্টোবরের মধ্যেই অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয় থাকলে তা আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে দ্রম্নত নিষ্পত্তি করতে হবে এবং যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ জড়িত রয়েছে সেক্ষেত্রে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে বাস্তবায়নের গতি জোরদার করতে হবে। এদিকে এডিপি বাস্তবায়নের হালচাল সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরীবিৰণ ও মূল্যায়ন বিভাগ জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) পেরিয়ে গেলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি ৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এছাড়া এ সময় সার্বিক বাসত্মবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের বাসত্মবায়ন হারের সমান। কিন্তু গত মাসের তুলনায় এই হার বেড়েছে দুই শতাংশ। জুলাইয়ে বাসত্মবায়ন হয়েছিল ৪ শতাংশ। এই দুই মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করতে পেরেছে মোট ২ হাজার ৬২১ কোটি ৮৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে এডিপি বাসত্মবায়নে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ। এ বিভাগের ৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা, ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা, বাসত্মবায়ন হার ২৮ শতাংশ।
সূত্র জানায়, শূন্য শতাংশ বাসত্মবায়নের হার হচ্ছে, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন সচিবালয়। এর একটি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি টাকা, এক টাকাও ব্যয় কতে পারেনি, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রনালয়ের ১২টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১০৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ২২টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৫০২ কোটি ১২ লাখ টাকা, ব্যয় নেই। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ৯টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ২৬৯ কোটি ১০ লাখ টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ২৩ প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দু'টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৩০৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (থোকসহ) ৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ২৯৮ কোটি টাকা, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ৬টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ২৯৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং অভ্যনত্মরীন সম্পদ বিভাগের দু'টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৩৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে আগস্টে এডিপি বাসত্মবায়নের দেঁৗড়ে এগিয়ে থাকা দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ৩০ শতাংশ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৮ শতাংশ, বিদু্যত বিভাগ ১৫ শতাংশ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১৩, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২, সংসদ সচিবালয় ১১, প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয় ১১, অর্থ বিভাগ ১১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ৯ শতাংশ এবং পরিকল্পনা বিভাগ ৯ শতাংশ এডিপি বাসত্মবায়ন করেছে।
সূত্র জানায়, এককভাবে পরিবহন, বিদু্যত এবং শিৰা ও ধর্ম খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে চলতি অর্থবছরের (২০১১-১২) জন্য ৪৬ হাজার কোটি টাকার নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হচ্ছে ২৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৫৯ শতাংশ এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে ১৮ হাজার ৬৮৫ কোটি, যা ৪১ শতাংশ। এবারের এডিপিতে মোট প্রকল্প রয়েছে ১ হাজার ৩৯টি। এর মধ্যে গত অর্থবছরের (২০১০-১১) অনুমোদিত প্রকল্প রয়েছে ৯৬২টি এবং বরাদ্দসহ নতুন প্রকল্প ৭৭টি। এছাড়া সবুজ পাতায় যুক্ত হয়েছে একেবারেই নতুন অননুমোদিন ৭০২টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে মঙ্গলবার জানান, কালকের (আজ) বৈঠকটি গুত্বপূর্ণ। এতে মন্ত্রণালয়গুলোর এডিপি বাসত্মবায়নের আমলনামা তুলে ধরা হবে। সচিবদের কঠোরভাবে পরিকল্পনা কমিশনের দেয়া নির্দেশ মেনে চলতে বলা হবে। শতভাগ এডিপি বাসত্মবায়নের কৌশল নির্ধারণে পরিকল্পনা কমিশনের পৰ থেকে নির্দেশনার পাশাপাশি যদি কোন মন্ত্রণালয়ের সচিব পরামর্শ দিতে চান সেগুলোও গ্রহণ করা হবে।
সূত্র জানায়, গত অর্থবছরের শুরম্নতে শতভাগ এডিপি বাসত্মবায়নের পথে বেশ কিছু বাধা চিহ্নিত করে এগুলো সমাধানে সুপারিশ দিয়েছিল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাসত্মবায়ন, পরীৰণ ও মূল্যায়ন বিভাগ। এগুলো হচ্ছে, যথাসময়ে বাসত্মবসম্মত ক্রয় পরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও অনুসরণ না করা। এৰেত্রে দরপত্র আহব্বান ও কন্ট্রাক এ্যাওয়ার্ড কাজে বিলম্ব হওয়া। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) প্রয়োজনীয় অর্থপ্রাপ্তির অভাব। প্রকল্প বাসত্মবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা। ভৌত কাজের ডিজাইন ও রেট সিডিউল পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া। প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ ও বদলির ৰেত্রে প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ না করে যোগ্যতা যাচাই ব্যতিরেকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ এবং ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদলি করা। সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা কর্তৃক যথাযথ পরীবিৰণের অভাবে প্রকল্প বাসত্মবায়ন বিলম্ব হয়। প্রকল্প বাসত্মবায়নকালীন এবং বাসত্মবায়নোত্তর আইএমইডির মনিটরিং প্রতিবেদনের সুপারিশ বাসত্মবায়নে গুরম্নত্ব প্রদান না করা। প্রকল্প সংশোধনে বিলম্বের কারণে ভূমির মূল্য বৃদ্ধি, অনেক ৰেত্রে পণ্য ও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি ঘটে। বর্তমানে অর্থবছরের শুরম্নতে তিন কিসত্মিতে অর্থছাড়ের সুযোগ থাকলেও তা যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় অর্থ ছাড়ে বিলম্ব ও দীর্ঘ সূত্রতা পরিলৰিত হয়, ফলে প্রাপ্ত অর্থের সদ্ব্যবহার সম্ভব হয় না। অনেক সময় সময়মতো প্রকল্পের পিসিআর পাওয়া যায় না কিংবা পাওয়া গেলেও তাতে তথ্যের ঘাটতি থাকে। সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্প যথাসময়ে সমাপ্ত না হওয়ার প্রবণতা লৰ্য করা যায়, এৰেত্রে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্প সমাপ্ত হয় না অথবা কাজ অসম্পূর্ণ রেখে প্রকল্প সমাপ্ত ঘোষণা করতে হয়। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পরিকল্পনা উইং নেই অথবা থাকলেও তাতে জনবল ও লজিস্টিক সুবিধা প্রয়োজন অনুযায়ী অপ্রতুল, ফলে মানসম্পন্ন প্রকল্প দলিল প্রণয়ন, সময়মতো প্রক্রিয়াকরণ ও সংশোধন সম্ভব হয় না এবং আইএমইডির জনবলের স্বল্পতা।

No comments: